এজাহার বা প্রাধমিক তথ্য বিবরণী হলো আমলযোগ্য অপরাধের খবর থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে পৌছাঁনোর দরখাস্ত বা মৌখিক খবর। যেকেউ (যে বা যারা ঘটনা সম্পর্কে অবগত) এজাহার দায়ের করতে পারে । বাংলাদেশ ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারায় প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বা এজাহার সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
১৫৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট কোন আমলযোগ্য অপরাধ সম্পর্কে মৌখিকভাবে দেয়া প্রত্যেকটি সংবাদ তিনি লিখে নিবেন অথবা তার নির্দেশক্রমে উহা লিখতে হবে, এবং সংবাদদাতাকে তা পড়ে শুনাতে হবে, এবং লিখিতভাবে প্রদত্ত বা উপযুক্ত মতে লিখিত প্রত্যেকটি সংবাদ এজাহার প্রদানকারী ব্যক্তি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে, এবং তার সারমর্ম উক্ত অফিসার কর্তৃক এই বিষয়ে সরকারের নির্দেশিত আকারে রক্ষিত একটি বইতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। তার মানে এই ধারা থেকে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যে, প্রাথমিক তথ্য বিবরণী লিখিত কিংবা মৌখিক হতে পারে।
একটি এজাহার বা এফ.আই.আর এর ফরম্যাট
তারিখ : ০৪/০২/২০২০ইং
বরাবর,
অফিসার ইনচার্জ
টেকনাফ থানা
কক্সবাজার জেলা।
বিষয় : এজাহার।
জনাব,
যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নিবেদন এই যে, আমি এস.আই/সুমন থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, আমি সাধারণ ডায়েরী নং ১১৪, তারিখ – ৩/০২/২০২০ ইং মূলে টেকনাফ থানার ইনচার্জ স্যারের নেতৃত্বে থানা এলাকার সেন্টমার্টিন এলাকায় ডিউটি করাকালীন জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর অধীন কক্সবাজারের স্থানীয় এন.জি.ও নোঙর এর প্রধান অফিস থেকে ফোনকলের মাধ্যমে জানতে পারি যে, সেন্টমার্টিন এলাকার ছেড়া-দ্বীপ জেটি পয়েন্ট ৬(ছয়) জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জনাব আবদুর রাজ্জাক সাহেব বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ইনচার্জ টেকনাফ থানা মহোদয়কে অবহিত করিয়া তাহার নির্দেশক্রমে ০৪/১২/২০১৮ ইং তারিখ ২৩.০০ ঘটিকায় সময় জেটি পয়েন্টে গিয়া শোভন ও আরো পাঁচজন ব্যক্তিকে কং/৪২৪ মোঃ মাসুদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া বিস্তারিত জানিতে পারি যে গত ০১/০২/২০২০ইং তারিখ টেকনাফ থানাধীন হোয়াইক্ষং এলাকার বাসিন্দা দুলাল নামের জনৈক ব্যক্তি সুমনকে মালেশিয়ায় চাকরি দেওয়ার কথা বলিয়া এক লক্ষ (১,০০,০০০) টাকা লইয়া সেন্টমার্টিনে পাঠায়। সেখানে গিয়া শোভন দেখিতে পায় যে, আরো ১৬ (জন) ব্যক্তি মালেশিয়ায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে অবস্থান করিয়াছে। একইদিন তাহারা রফিক এবং সুজন নামের দুইজন ব্যক্তির নির্দেশনায় এবং তদারকিতে একটি হোটেল এর রুমে অবস্থান করে যাহা সেন্টমার্টিন মূল টাউন থেকে একটু দূরে। সেখানে শোভন নামের মূল ভিকটিম দুলাল নামের মূল চাকরিদাতা আশ্বাসে ব্যক্তিকে ফোন দিলে দেখা যায় যে তার মোবাইল বন্ধ রহিয়াছে। রফিক এবং সুজন নামের ব্যক্তিদয়ের অধীন হোটেলে থাকাকালীন কোন প্রকার শুকনো খাবার এবং পানীয় না দিয়া তাদের দুইদিন সেইখানে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়। তারপর যেইদিন তাদের মালেশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়াছিল সেইদিন কিছু রুটি এবং পানীয় খাইতে দিয়াছিলো। ০৪/০২/২০২০ ইং তারিখ সেন্টমার্টিন হইতে মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে বোটে রওনা হয় শোভন এবং তার সঙ্গিয় ১৬ জন ব্যক্তি। উক্ত বোটে রফিক এবং সুজনের নেতৃত্বে আরো তিনজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি তাদের উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। দেশী বন্দুকের বাট দিয়া শোভনের মাথায় তিনবার উপর্যপুরী বাড়ি দেওয়া হয় এবং কোন প্রকার খাবার দেওয়া হয় নাই। সুতরাং ১/ দুলাল ২/ রফিক ৩/ সুজন ও শোভনসহ অন্য ব্যক্তিবর্গকে ভয়ভীতি প্রদর্শন বা বল প্রয়োগ করত চাকুরির উদ্দেশ্যে গমন করত: মানব পাচার ও প্রতিরোধ দমন আইনে ২০১২ এর ধারা ৬/৭/৯ অধীন অপরাধ করিয়াছে। সবকিছু সংগ্রহ করিতে বিলম্ব হইল।
অতএব উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে বর্ণিত আইন ও ধারায় নিয়মিত মামলা দায়ের করিতে মর্জি হয়।
বিনীত,
(সুমন চৌধুরী)
বিপি : ১৪১০২৯৩০
সাব ইন্সপেক্টর
টেকনাফ থানা।
নোট: এই এজাহার শুধুমাত্র শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহারের জন্য কাল্পনিকভাবে তৈরিকৃত, উক্ত এজাহারে ব্যবহৃত নাম, চরিত্র সবকিছু কাল্পনিক।